পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মধ্য নাচনাপাড়া গ্রামের পার্বতী রানী ছাগল পালন করে আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন। সমাজে তার বেড়েছে মর্যাদা। পরিচিতি পেয়েছেন একজন স্বাবলম্বী নারী হিসেবে।
পার্বতী রানী সংসারে এক সময় অভাব-অনটন লেগেই থাকত। তিন বেলার মধ্যে কোনোদিন দুই বেলা, কোনোদিন এক বেলা এমনকি কোনোদিন না খেয়ে থাকতে হতো পার্বতী রানীর পরিবারকে। ১৩ বছর আগে তার সংসারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। দিনমজুর স্বামীর রোজগারের টাকায় সংসার চলত না। এ সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে তাকে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হতো। এক পর্যায়ে তিনি পাশের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেন। কিন্তু তাতেও তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার চলছিল না। ইতিমধ্যে কলাপাড়া উপজেলায় আরইআরএমপি-২ সদস্য সংগ্রহের সময় টিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ পার্বতী রানীকে এই প্রকল্পের সদস্য হিসেবে মনোনীত করে। ১ জানুয়ারী ২০১৪ সে আরইআরএমপি-২ প্রকল্পের সদস্য হয়ে কাজ শুরু করে। এতে সে প্রতিদিন একশত টাকা হিসেবে মাসে তিন হাজার টাকা পেতে শুরু করে এবং ব্যাংকে প্রতিদিন ৫০ টাকা হিসেবে ১ হাজার ৫০০ টাকা হিসেবে জমা হতে শুরু করে। পার্বতী রানীর ছাগল পালনের খুবই শখ। সে কারনে পার্বতী রানী ইউপিপি-উজ্জীবিত প্রকল্প থেকে ১৪ থেকে ১৫ অক্টোবর ২০১৪ দুদিন ব্যাপি মাচা পদ্ধতিতে ছাগল পালনের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহন করে।
প্রশিক্ষণ পরবর্তী পার্বতী রানী একটি ছাগলের বাচ্ছাকে তিনি ভাগী হিসেবে পালন করা শুরু করেন। ৫ মাসের মাথায় ওই ছাগল দুটি বাচ্ছা জন্ম দেয়। এরপর একটি ছাগলের বাচ্ছা তার ভাগে থেকে যায়। এভাবে ধীরে ধীরে তার ভাগে ছাগলের পরিমাণ বাড়তে থাকে। ইতিমধ্যে আরইআরএমপি-২ প্রকল্পের দুবছরের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তার সঞ্চিত ৩৬ হাজার টাকা সুদে-আসলে ৩৭ হাজার ৩৮০ টাকা সে ফিরে পায়। এর থেকে ১১ হাজার টাকায় তিনটি ছাগল কেনেন তিনি। নিজের কেনা তিনটি ও ভাগে পাওয়া ছাগলগুলো যতেœর সঙ্গে পালন করতে থাকেন পার্বতী রানী। এরপর থেকে আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
পরবর্তী সময়ে সঠিক চিকিৎসা এবং লালন-পালনের মাধ্যমে বর্তমানে তার ১৪টি ছাগল রয়েছে। ৪ মাস আগে ৪টি ছাগল বিক্রি করে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ করে মেয়ের বিয়ে দেন। বর্তমানে এক ছেলে এক মেয়ে আর স্বামী নিয়ে পার্বতী রানী সুখেই দিন কাটাচ্ছেন।