বরগুনা জেলার, বরগুনা সদর উপজেলার কালিরতবক গ্রামের মো. ছগির হোসেনের স্ত্রী মোসাম্মাৎ মিতু। বর্তমান বয়স ২৪ বছর। বাবার বাড়ি বরগুনার আমতলী। সাত বছর আগে তার বিয়ে হয়। দুবছরের মাথায় তার প্রথম সন্তান সুমাইয়া জন্ম নেয়। সুমাইয়ার বর্তমান বয়স ৫বছর। স্বামী ছগির হোসেন ভারাটে মটর সাইকেল চালায়। কোনভাবে সংসার চলে।
সংগ্রামের বরগুনা সদর শাখায় উজ্জীবিত প্রকল্প চলমান রয়েছে। এই কার্যক্রমের আওতায় কালিরতবক মহিলা সমিতির মোসাম্মাৎ মিতু সদস্য। মিতুদের পারিবারিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দ্বিতীয় সন্তান নেয়। গর্ভমাসের ষষ্ঠ মাসে মিতু প্রথম বারের মত ১৫ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে উজ্জীবিত প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার (সোস্যাল) এর চেকআপ গ্রহন করেন। চেকআপকালীন তার শারীরিক অবস্থা তেমন সুস্থ নয়। চেকআপের সাথে মিতুকে একটি স্বাস্থ্য ও পুষ্টি মনিটরিং কার্ড প্রদান করা হয় এবং মিতুর তথ্য-উপাত্তসমূহ লিপিবদ্ধ করে দেয়া হয়। পাশাপাশি ১০০০দিনের একটি পোস্টার প্রদান করা হয়। মিতু পিও সোস্যালের পরামর্শ গ্রহন করে এবং পরামর্শ অনুযায়ী চলতে থাকে। সে নিয়মিত আয়রণ ও ফলিক এসিড বড়ি খায়, ভারী কাজ করা বন্ধ করে, দিনে দুইঘন্টা বিশ্রাম নেয়, খাবার গ্রহনে নিয়ম মেনে চলে। তার বাড়িতে গিয়ে মিতু স্বামী ছগির হোসেনের সাথে মতবিনিময় করে। এতে তার সমস্যাসমূহ কমে যেতে থাকে। পিও সোস্যাল ১৪ মে, ১৮ জুন ও ২৭ জুলাই তাকে চেক আপ করে। সম্ভাব্য ডেলিভারী তারিখ অনুযায়ী তাকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। প্রসব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার গর্ভের শিশুর পরিস্থিতি জানার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাচ্চার গতিবিধি লক্ষ করে এবং আল্ট্রসনো করে তার প্রয়োনীয় পরিমান গর্ভের পানি কমে যাওয়ার কারনে ডাক্তার দ্রæত সিজার করার পরামর্শ প্রদান করে। ৩ আগস্ট তার সিজার করা হয়। একটি ৩ কেজি ৮০০ গ্রামের সুস্থ সন্তান জন্ম দেয়। মিতুর ধারণা উজ্জীবিত প্রকল্পের নিরলস সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ তার সন্তান জন্মদানে ব্যাপক ভ‚মিকা রেখেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে থেকেও বাড়িতে বসেই নিয়মিত অনাগত সন্তানের প্রয়োজনীয় তথ্য সে জানতে পেরেছে। মিতুর বক্তব্য-উজ্জীবিত প্রকল্পের এই অবদান সে কখনো ভুলতে পারবে না।