পাথরঘাটা ইউনিয়নের ছৈলাতলা গ্রামের সালমা কাজীর বাড়ি। এমন একটি বাড়ি যেখানে পরিবারের সকল সুবিধা বিদ্যমান। সাজানো গোছানো এমন একটি বাড়ি যা দেখলে সবার নজর কাড়ে।
সালমা কাজীর স্বামীর নাম মো. আবদুস সালাম কাজী। পাথরঘাটা চরদুয়ানী রাস্তার লাগোয়া সালমাদের বাড়ি। সালাম কাজীর দুটো গরু ছিলো যা দিয়ে তার সংসার চলছিলো। কিন্তু পরিবারে পর্যাপ্ত জমি ছিলো যেখানে অনেক কিছুই করা সম্ভব ছিলো কিন্তু সালমা দম্পতির সেরকম ধারণা না থাকার কারনে বাড়িটিকে সাজাতে পারছিল না। ২০১৮ সনের ফেব্রæয়ারি মাসে সমৃদ্ধি কর্মসূচির মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাড়ি রূপায়িত করার জন্য বাস্তবায়ন শুরু হয়। সমৃদ্ধি উদ্যোগ উন্নয়ন কর্মকর্তা সালমাদের বাড়িটি প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে। প্রথম দিকে সালমা দম্পতিকে নিয়ে উদ্যোগ উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন কাউন্সিলিং করে। জনাব মাহতাব বসতবাড়ির পতিত জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা, বসতবাড়ির একই জমিকে একই সাথে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করার প্রক্রিয়া, সারা বছর শাক-সবজি ও ফলমূল উৎপাদন করে পরিবারের আয় বাড়ানো ও পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যগত ও পুষ্টিগত উন্নয়ন সম্পর্কে আলোচনা করেন। এসব আলোচনা শোনার পর সালমা দম্পতি তাদের বাড়িটি সমৃদ্ধ বাড়ি হিসেবে গঠন করার জন্য রাজী হয়।
সমৃদ্ধ বাড়িতে অনেকগুলো বাড়তি সংযোজন আছে। সে কারনে সমৃদ্ধি কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০০০ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়। সালমা দম্পতি নিজেরাও একটা বড় অংশ টাকার জোগান দেয়। শুরু হয় সমৃদ্ধ বাড়িতে রূপান্তর। গেট করা হয়। ফুল গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়। তার যে গরু আছে সেই গরুর গোবর থেকে খামারজাত সার তৈরির জন্য ক‚প তৈরি করা হয়। নিরাপদ পানির ট্যাংক স্থাপন করা হয়। ভার্মি কম্পোস্ট প্লান্ট তৈরি করা হয়। পুকুরে তিন স্তরের মাছ চাষ করা হয়। দেশী হাঁস, মুরগি, কবুতর ও ছাগল পালনের খামার করা হয়। বন্ধু চ‚লা স্থাপন করা হয়। বিভিন্ন ধরনের ফলজ, বনজ ও ঔষধী গাছ রোপন করা হয়। বছর ব্যপি শাক-সবজি চাষের ব্যবস্থা করা হয়।
সমৃদ্ধ বাড়ির তৈরির মাধ্যমে সালমা দম্পতির বসতবাড়ির জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। এরফলে উক্ত পরিবারটি সারা বছরই পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী শাক-সবজি ও ফলমূল উৎপাদন করতে পারে, পাশাপাশি বাড়তি অর্থ উপার্জন করতেও পারে যা তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারছে। বর্তমানে তার বাড়ি থেকে প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা আয় হয়। বাড়িতে উৎপাদিত শাক-সবজি, ফল-মূল, মাছ, ডিম, দুধ পরিবারের সবাই খায়। বাড়ির পরিবেশগতমান উন্নয়ন হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের উন্নত জীবনবোধ তৈরী হয়েছে। এর ফলে সামাজিকভাবে গ্রহনযোগ্যতা বেড়েছে।